হার্ট অ্যাটাক কেন হয়?
- সুস্বাস্থ্য প্রকাশনা
- Jul 16
- 7 min read
ডাঃ শঙ্কর কুমার চ্যাটার্জী

হার্ট অ্যাটাক (Myocardial Infarction) কথাটি এখন বহুল প্রচারিত ওকটি শব্দ। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব পাশের বাড়ি বা দূরের কারো, প্রত্যেক ঘরে কেউ না কেউ ভুক্তভোগী। প্রতিনিয়ত অসংখ্য রোগীর মৃত্যু হচ্ছে এই মারণরোগ। কিন্তু কীভাবে এড়িয়ে যাওয়া যায় এই অসুখ, আর যদি হয়েই যায় তবে বাঁচার পথই বা কী?
হার্ট অ্যাটাক থেকে মুক্তি পেতে হলে আগে জানতে হবে হার্ট অ্যাটাক কেন এবং কীভাবে হয় আর কীভাবে চললে তার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

হার্ট প্রতিনিয়ত সঙ্কোচন প্রসারণ করে সমস্ত কোষের যে রক্ত সরবরাহ করে সেই কার্যক্ষমতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য হার্ট মাসল-এর প্রতিনিয়ত রক্তের প্রয়োজন হয়। যে প্রধান ধমনী বা তার শাখা-প্রশাখা দিয়ে হার্ট মাসল-এর রক্ত সরবরাহ হয় সেই জায়গার মাসল রক্তাল্পতায় ভোগে যাকে Ischaemic Heart Disease বলা হয়। কোন এলাকায় রক্ত সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ হয়ে গেলে Myocardial Infarction বা হার্ট অ্যাটাকের সৃষ্টি হয়। ধমনীর সঙ্কুচিত জায়গাকে আর্টারী ব্লক বলা হয় যার পরিমাণ পরিমাপ করা যায় অ্যাঞ্জিওগ্রাফি নামক একটি পরীক্ষার সাহায্যে। পঞ্চাশোর্ধ মানুষের 50% বা তার কম পরিমাণ ব্লক দেখা দিলে মেডিসিন দিয়েই চিকিৎসা করা হয়। 60% বা তার বেশি ব্লক থাকলে সার্জারি (অ্যাঞ্জিওপ্লাস্ট বা বাইপাসের) প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।
ব্লক যদি এক জায়গায় থাকে তবে সাধারণত Angioplasty Stent ব্যবহার করা হয়। দুই বা ততোধিক জায়গায় ব্লক থাকলে ওপেন হার্ট বা বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আগে যে ওপেন হার্ট বা বাইপাস সার্জারি করা হত, পা থেকে অ্যার্টারি খুলে নিয়ে হার্টের পরিত্যক্ত আর্টারির জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হত। এখন অনেক উন্নতমানের সার্জারি প্রচলিত হয়েছে যার নাম MICS (মিনিমালি ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সাজারি) যেটা নামেই বলে দিচ্ছে যেটুকু প্রয়োজন সেটুকু সার্জারি। অর্থাৎ যে জায়গায় ব্লক আছে শুধু সেই জায়গাটা কেটে বাদ দিয়ে অন্য কোনো জায়গা থেকে একটা টুকরো আর্টারি এনে সেখানে বসিয়ে দেওয়া হয় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে। ওপেন হার্ট-এ যেমন বুকের অনেকটা অংশ কেটে অপারেশন করা হয় এখানে বুকের বাঁদিকে ছোট্ট একটা ফুটোর মাধ্যমে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে কম সময়ের মধ্যে অপারেশন করে ফেলা যায়। আর এখানে যেমন সাতদিন বাদেই অফিসে যেতে পারে। বাইপাসে যেখানে লাগে অন্ততঃ একমাস।

কীভাবে জানবেন আপনার ধমনী সরু হয়ে গ্যাছে বা হার্ট মাসলের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা কমে গেছে? সিঁড়ি দিয়ে উঠছেন বা একটু জোরে হাঁটতে শুরু করেছেন হঠাৎ দেখবেন শ্বাসটা জোরে জোরে নিতে হচ্ছে। বুকের বাঁদিকটা কেউ যেন চেপে ধরছে হয়তো বা কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম, একাধিকবার ঘটে। এরকম হয় তবে কালবিলম্ব না করে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে, প্রথমে ই.সি.জি. করে দেখতে হবে, অনেক সময় ইসিজি-তে ধরা পড়ে না, প্রায় 20% ক্ষেত্রে। তাহলে TMT বা ট্রেডমিল করে দেখতে হবে। প্রয়োজনে ইকো করে দেখা হয়। এর সঙ্গে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয় কোলেস্টেরল ট্রাইগ্লিসারাইড বিশেষত এল.ডি.এল. মাত্রাতিরিক্ত আছে কিনা।
কোলেস্টেরলের অত্যধিক পরিমাণ 250 mg পর্যন্ত কিন্তু এটা একটু বেশি হলেও তেমন ক্ষতি হয় না লাইফ স্টাইল-এর পরিবর্তন ধূমপান বর্জন, মদ্যপান বর্জন অথবা সীমিত পরিমাণে রাখলে, ফ্যাট জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করলে এবং নিত্য কায়িক পরিশ্রম বা 2 কিঃ মিঃ প্রাতঃভ্রমণে কোনো স্টোরলের পরিমাণ স্বাভাবিক হতে সাহায্য করে। কিন্তু সমস্যা হয় রক্তে এল. ডি. এল. অর্থাৎ খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ যদি 100 mg বা তার বেশি থাকে। এসব জেনেটিক বা বংশগত বাবা-মা, বা তাঁর বাবা মায়ের কেমিক্যাল এটা বংশানুক্রমে বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। নির্দিষ্ট ওষুধ ছাড়া এর কমাবার কোনো উপায় নেই, (যদিও এখন ভালো ওষুধ এসে গেছে) লাইফ স্টাইল পরিবর্তন বা ডায়েট কন্ট্রোল করেও এল. ডি. এল. কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়ে হঠাৎ অ্যাটাকের সৃষ্টি করে। যাকে প্যানিক হার্ট অ্যাটাক বলা হয়। তাই রক্তে যাদের এল. ডি. এল. বেশি আছে তাদের নিজেদের উত্তেজিত হওয়া বা অন্য কাউকে উত্তক্ত করা, অবশ্যই বর্জন করা উচিত।

E.C.G. TMT, Echo আর লিপিড প্রোফাইল করলে বুঝতে পারা যায় হার্টের অসুখ আজ কিনা আর্টারির কোথাও ব্লক আছে কিনা। সাধারণভাবে TMT Positive থাকলে করোনারী ডায়ালেটর দিয়ে চিকিৎসা করা হয় যদিও পর্যন্ত কষ্টের উপসম হয়, কিন্ত যদি দেখা যায় বুকের ব্যথা থেকেই যাচ্ছে তখন Angiogram করে ব্লক-এর পরিমাপ করা হয়, কোনো ব্লক যদি 70% বা তার বেশি হয় এবং হাঁটাচলায় কষ্ট হয় তখন Steng বসাতে গেলে খরচ অনেক বেশি পড়ে বাইপাসের থেকে। আর Steng বসানোর পর 5 থেকে সাত বছর পরে আবার ধীরে ধীরে ব্লক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায় যাকে Recamalisation বলা হয় তখন আবার Stent বসানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাই কোনো রোগীর কোনটা প্রয়োজন তার সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কেন হয় এ অসুখ– ছোটবেলায় কোনো সমস্যা হয় না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন ধরা পড়ে।
প্রথমতঃ বংশগত। কারো ফ্যামেলিতে যদি 50 বছর বয়সের আগে হার্ট অ্যাটাক হয় তার থেকে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে তবে তার পরবর্তী প্রজন্ম হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে। রক্তচাপ বৃদ্ধি হার্ট অ্যাটাকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, এটাও বংশগত। এছাড়া ডায়াবেটিস ও পরবর্তী প্রজন্মে প্রভাব বিস্তার করে হার্টের অসুখ ডেকে আনতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ মানষিক চাপ বৃদ্ধি বা Stress, এবং বিশ্রামহীন অতিরিক্ত পরিশ্রম। কায়িক পরিশ্রম যেমন হার্টের রক্ত চলাচলে সহায়তা করে হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম ঠিক উল্টোটাই করে, হার্টকে Damage-এর মুখে ঠেলে দেয়। তাই হার্টের অল্প কিছু পরিবর্তন দেখা দিলে সচেতন হওয়া বিশেষ প্রয়োজন। অসুস্থ হার্ট খুব স্পর্শকাতর সামান্য সংকেত পাঠাতে শুরু করে। কোনোদিন অ্যাঞ্জিওগ্রাম করে দুটো বা তিনটে ব্লক ধরা পড়ল অথবা হার্ট অ্যাটাক নিয়েও হসপিটালে ভর্তি হল–এটা সাধারণতঃ দেখা যায় না। হয়তো তার কাছে আগেই সংকেত ছিল কিন্তু তিনি তাকে অগ্রাহ্য করেছেন বা কোনো গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন নি।
হার্ট অ্যাটাকের পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা আবশ্যিক, প্রথম দু থেকে তিন ঘণ্টার ভেতর চিকিৎসা শুরু করতে পারলে সব থেকে ভালো ফল পাওয়া যায়। এই প্রথম দু-তিন ঘণ্টা চিকিৎসার ‘গোল্ডেন আওয়ার’ বলা হয়, দেরী করে ফেললে হার্ট মাসল নেক্রোসিস হতে শুরু করে ফলে চিকিৎসার আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না।
উপসংহার– মন সর্বদা প্রফুল্ল রাখুন। পেটের অতিরিক্ত মেদ জমতে দেবে না। লবণ জাতীয় খাবার কম খান। পাতে অতিরিক্ত লবণ একেবারেই না। ধূমপান ভুলে থাকুন। মদ্যপানের অভ্যেস না থাকলেই ভালো। দুপুরে না ঘুমানো এবং প্রতিদিন একঘণ্টা প্রাতঃভ্রমণ করুন। বুকের যে কোনো কষ্টে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে না ভুলে আপনার হার্ট অবশ্যই ভালো থাকবে।

হার্ট সুস্থ রাখার জন্য কি ফল খাব?
হার্ট (হৃদযন্ত্র) সুস্থ রাখার জন্য এমন কিছু ফল খাওয়া উচিত যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার, পটাশিয়াম এবং অন্যান্য হৃদযন্ত্র-সহায়ক পুষ্টিতে ভরপুর। ১০টি ফলের তালিকা দেওয়া হলো যা হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে:
আপেল (Apple)
কারণ: সলিউবল ফাইবার (পেকটিন) থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে সাহায্য করে।
খাওয়ার উপায়: প্রতিদিন ১টি আপেল খেলে উপকার।
কমলা / বাতাবি লেবু / মাল্টা (Citrus Fruits)
কারণ: ভিটামিন C ও ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যা রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
বিশেষ করে: বাতাবি লেবু, কমলা, মাল্টা।
কলা (Banana)
কারণ: প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
উপকারিতা: হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
বেরি জাতীয় ফল (Berries)
ফল যেমন: ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি, জাম।
কারণ: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (anthocyanins) থাকে যা হৃদযন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং রক্তনালীর কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
ডালিম (Pomegranate)
কারণ: পলিফেনল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা রক্তনালীর গঠন মজবুত রাখে।
রোজ খেলে: রক্তচাপ ও প্লাক গঠন কমে।

আঙুর (Grapes)
কারণ: ফ্ল্যাভোনয়েড ও রেসভারাট্রল থাকে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
বিশেষত: কালো আঙুর বেশি উপকারী।
পেঁপে (Papaya)
কারণ: ভিটামিন A, C, E এবং ফাইবারে ভরপুর, যা হৃদপিণ্ডের প্রদাহ কমায়।
হজমে সহায়ক: ফলে শরীরে অতিরিক্ত চাপ পড়ে না।
কিউই (Kiwi)
কারণ: রক্তচাপ ও রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা কমায়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: হার্টের টিস্যু রক্ষা করে।
আভোকাডো (Avocado)
কারণ: ভালো ফ্যাট (monounsaturated fats) ও পটাশিয়াম থাকে, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
আমলকি (Indian Gooseberry / Amla)
কারণ: ভিটামিন C প্রচুর থাকে, যা হৃদপিণ্ডের পেশিকে শক্তিশালী করে এবং কোলেস্টেরল কমায়।
পরামর্শ:
ফল খাওয়ার সময় চিনি মেশানো জুস না খেয়ে সম্পূর্ণ ফল খাওয়া ভালো।
প্রতিদিন ২–৩ রকম ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন, বিশেষত মৌসুমি ও দেশীয় ফল।
ফলের পাশাপাশি হাঁটা, পর্যাপ্ত জল, কম লবণ খাওয়াও জরুরি।

হার্ট সুস্থ রাখার জন্য কি সবজি খাব?
হার্ট সুস্থ রাখার জন্য এমন সবজি খাওয়া উচিত যেগুলোতে রয়েছে প্রচুর ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ (minerals) ও কম ক্যালোরি। হার্ট ভালো রাখার জন্য উপকারী সবজির তালিকা দেওয়া হলো:
ব্রকোলি (Broccoli)
উপকারিতা: ফাইবার, ভিটামিন C ও K সমৃদ্ধ; কোলেস্টেরল কমায় ও রক্তনালীর প্রদাহ হ্রাস করে।
রান্নার পরামর্শ: হালকা ভাপ দিয়ে বা সিদ্ধ করে খাওয়া ভালো।
পালং শাক (Spinach)
উপকারিতা: প্রচুর আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
প্রতিদিনের খাবারে: এক বাটি পালং যুক্ত রাখলে হৃদযন্ত্রের পেশি ভালো থাকে।
গাজর (Carrot)
উপকারিতা: বিটা-ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা করে।
লাউ / কুমড়ো / ঝিঙে (Gourd Family)
উপকারিতা: সহজপাচ্য, হালকা, ফাইবার ও জলসমৃদ্ধ — হার্টের জন্য খুবই উপকারী।
রসুন (Garlic)
উপকারিতা: রক্তে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমায়, রক্তচাপ হ্রাস করে।
উপায়: কাঁচা ১-২ কোয়া রসুন খাওয়া উপকারী।
পেঁয়াজ (Onion)
উপকারিতা: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও সালফার যৌগ থাকে, যা রক্তচলাচল ভালো রাখে ও প্রদাহ কমায়।

মেথি শাক (Fenugreek greens)
উপকারিতা: কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে, হার্টকে সুরক্ষা দেয়।
বাঁধাকপি (Cabbage)
উপকারিতা: ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা হৃদপিণ্ডের কোষ সুরক্ষায় কাজ করে।
ভুট্টা (Sweet corn)
উপকারিতা: ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর; রক্তে শর্করার মাত্রা ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
বেগুন (Eggplant)
উপকারিতা: ফাইবার ও ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যা হৃদপিণ্ডের রক্তনালীগুলোর স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে।
বিট (Beetroot)
উপকারিতা: নাইট্রেট সমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ কমায় ও হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
ঢেঁড়স (Ladies' Finger / Okra)
উপকারিতা: ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে; কোলেস্টেরল হ্রাসে সহায়ক।
হার্টের জন্য সবজি খাওয়ার সময় যেসব বিষয়ের খেয়াল রাখবেন:
ভাজাভুজি বাদ দিন: অতিরিক্ত তেলে ভাজা সবজি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
অল্প লবণ ও মশলা ব্যবহার করুন।
রোজ রঙিন সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন: যেমন — গাজর (কমলা), বিট (লাল), পালং/বাঁধাকপি (সবুজ), বেগুন (বেগুনি)।
হালকা সিদ্ধ, ভাপে রান্না, বা সালাদে খাওয়া ভালো।

হার্ট সুস্থ রাখার জন্য কি মাছ খাব?
হার্ট (হৃদযন্ত্র) সুস্থ রাখার জন্য এমন মাছ খাওয়া উচিত যেগুলোতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এমন ১০টি মাছের তালিকা দেওয়া হলো যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক:
রুই মাছ (Rohu)
উপকারিতা: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে; কোলেস্টেরল কমায় ও রক্তনালীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
পশ্চিমবঙ্গে খুব সহজলভ্য।
কাতলা মাছ (Katla)
উপকারিতা: উচ্চ প্রোটিন, কম চর্বি ও কিছুটা ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ।
পরামর্শ: হালকা ঝোল বা ভাপে রান্না করলে বেশি উপকারী।
সরপুঁটি/পুঁটি মাছ (Punti fish)
উপকারিতা: ছোট মাছ, হাড়সহ খাওয়া যায় বলে ক্যালসিয়াম ও ওমেগা-৩ পাওয়া যায়।
মাগুর মাছ (Magur)
উপকারিতা: প্রোটিন বেশি, চর্বি কম, সহজপাচ্য — হার্ট ও কিডনির রোগীদের জন্যও উপযুক্ত।
পাবদা মাছ (Pabda)
উপকারিতা: চর্বিহীন, অল্প মশলায় রান্না করলে হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো।
তেলাপিয়া মাছ (Tilapia)
উপকারিতা: প্রোটিন সমৃদ্ধ, কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যেন খুব বেশি ফার্ম-জাত (কৃত্রিমভাবে চাষ করা) না হয়।
টিপস: ভাজা নয়, ভাপা বা হালকা ঝোল।
ইলিশ মাছ (Hilsa) – পরিমিত পরিমাণে
উপকারিতা: ওমেগা-৩ বেশি, তবে চর্বিও বেশি — তাই সপ্তাহে ১ বার খাওয়াই ভালো।
পরামর্শ: খুব তেলে ভাজা বা ঝাল ঝোল না করে হালকা রান্না করা ভালো।
সারডিন (Sardine)
উপকারিতা: উচ্চমাত্রায় ওমেগা-৩ ও ক্যালসিয়াম থাকে, হৃদপিণ্ডের প্রদাহ ও কোলেস্টেরল কমায়।
মাছের তেল (Fish Oil / Cod Liver Oil)
উপকারিতা: সরাসরি ওমেগা-৩ এর উৎস; চিকিৎসকের পরামর্শে ক্যাপসুল বা সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যায়।

❌ যে ধরনের মাছ বা রান্না এড়িয়ে চলবেন:
অতিরিক্ত ভাজা মাছ (Deep fried)
অতিরিক্ত ঝাল ও তেলে ভেজে তৈরি রান্না
ফার্মে চাষকৃত মাছ যদি সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক বা কেমিক্যাল ব্যবহার হয়
ভাপে রান্না (Steamed), গ্রিলড বা হালকা ঝোল হৃদরোগীদের জন্য সবচেয়ে ভালো।
হালকা হলুদ, লবণ, আদা, রসুন দিয়ে রান্না করলে স্বাদ ও স্বাস্থ্য দুই বজায় থাকে।

Comments