গর্ভাবস্থায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা কেন এত জরুরি
- সুস্বাস্থ্য প্রকাশনা
- Apr 1
- 4 min read
ডা. সবুজ সেনগুপ্ত - (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ)

আজকাল গর্ভাবস্থায় একটি মেয়েকে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অনেকেরই খুব সোচ্চারে না হলেও জিজ্ঞাসা থাকেই যে, কেন এত পরীক্ষা! আগে তো এত পরীক্ষার বালাই ছিল না। সত্যি কথাই তো, আজ থেকে মাত্র চার দশক আগে কোথায় ছিল এত পরীক্ষা। আলট্রাসনোগ্রাফিরও বালাই ছিল না। আমরা চিকিৎসকেরা গভীর অন্ধকারে থাকতাম যতক্ষণ না শিশুটি জন্ম নিচ্ছে। তখন সুস্থ শিশু হলে তো খুব ভালো, কখনো জন্ম নিত বিকলাঙ্গ শিশু। কখনোবা ডাউন সিনড্রোম জাতীয় কোনো সমস্যা প্রকট হত শিশুটি বড় হবার সাথে সাথে। এমনকী যমজ সন্তানও নির্ণয় করা খুব অভিজ্ঞ চিকিৎসক না হলে সম্ভব হত না। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে থাকলে জন্ম নিত বিকলাঙ্গ শিশু, অ্যানেনকেফালি (যার ব্রেন এবং মাথার হাড় তৈরি হয়নি)।

ফোলিক অ্যাসিডের ঘাটতি থাকলে শিরদাঁড়ার নীচে টিউমার (মেনিঙ্গোসিস, মেনিঙ্গোমাইলোসিস)। এছাড়া আরও আরও অনেক।
এখন গর্ভাবস্থায় কোনো সমস্যা হতে পারে কি না, তার জন্য অনেক পরীক্ষার প্রয়োজন। এই স্ক্রিনিং-এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কোনো নিউরাল টিউব ডিফেক্ট আছে কি না, ক্রোমোজোমের কোনো বিচু্যতি বা জিনে কোনো বিচ্যুতি আছে কি না। অথবা স্পাইন বাইফিডা (শিরদাঁড়ার হাড় জোড়া না লাগা), টাকরার তালুতে জোড়া না লাগা, থ্যালাসেমিয়া এবং আরও কত কী।
স্ক্রিনিংয়ের মধ্যে রক্ত পরীক্ষা, রক্তচাপ মাপা এবং আলট্রাসাউন্ড খুবই প্রয়োজনীয়। বিশেষ পরীক্ষার মধ্যে অবশ্যই অ্যামনিওসিসটোসিস, বেরিওনিকভিলাস স্যাপ্লেনিং—যাতে করে জেনেটিক বা ক্রোমোজোমের অসঙ্গতি ধরা পড়ে।
এই যে শিশুর জন্মের আগেই সমস্যার নির্ণয় করার তিনটি উদ্দেশ্য আছে—এক, জন্মের আগে বা পরেই ঠিক সময়মতো চিকিৎসা শুরু করা। দুই, যদি দেখা যায় যে শিশুটির মধ্যে এতই অসঙ্গতি আছে যে তাকে বাঁচিয়ে রেখে লাভ নেই তখন গর্ভপাতের সুযোগ দেওয়া। তিন, কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকলে মাতাপিতাকে সামাজিকভাবে, মানসিকভাবে বা আর্থিকভাবে তৈরি হওয়ার সুযোগ দেওয়া। গর্ভস্থ শিশু যদি মৃত হয় তারও খবর মাতা-পিতাকে দেওয়া যাবে যাতে তারা মানসিকভাবে তৈরি থাকে।

ফার্স্ট ট্রাইমেস্টার (প্রথম তিন মাসের মধ্যে)—প্রথম 6 সপ্তাহের মধ্যে প্রথম আলট্রাসাউন্ড করে ভ্রূণের বয়স নির্ধারণ করে নিলে খুব ভালো হয়। যমজ শিশু আছে কি না তাও নির্ণয় হয়ে যাবে।
1-13 সপ্তাহের মধ্যে—আলট্রাসাউন্ড করে দেখা এন.টি বা নিউরাল ট্রাসলুসেন্সি এবং রক্ত পরীক্ষায় বিটা-এইচ.সি.জি এবং PAPP । যাকে বলে ডুয়াল মার্কার। এতে কিছু ঝুঁকির ব্যাপার অর্থাৎ ডাউন সিনড্রোম, ট্রাইসোমি 18, ট্রাইসোমি 13 এগুলো বোঝা যেতে পারে। এগুলো সবই জড়বুদ্ধি নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুর ইঙ্গিত দেয়। এটাতে প্রায় 82 থেকে 87 শতাংশ সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা। অবশ্য 5 শতাংশ সম্ভাবনা থাকে ভুল ধারণা হবার।
দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে (13 সপ্তাহ থেকে 24 সপ্তাহের মধ্যে)—অ্যানোমেলি স্ক্যান করা হয় (18 থেকে 22 সপ্তাহের মধ্যে)। এটাতে ভ্রূণের শারীরিক কোনো অসঙ্গতি থাকলে ধরা পড়ে। যমজ বা তার বেশি সন্তান, অ্যানেনকেফালি বা মুন্ডহীন সন্তান, শিরদাঁড়ার হাড় না জোড়া লাগা, কাটা ঠোঁট, হার্টের কোনো ত্রুটি, কিডনি তৈরি না হওয়া ইত্যাদি ধরা পড়ে যাবার সম্ভাবনা।
আলট্রাসনোগ্রাফি নিয়ে অনেক কথা বলা হল। এগুলো সবই আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যার অবদান। কিন্তু তাই বলে সাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার গুরুত্বও কিন্তু কম নয়।
যেমন হিমোগ্লোবিন। একটি মেয়ে মা হবার আগে নিশ্চয়ই হিমোগ্লোবিন অন্তত 12 গ্রাম নিয়ে যাত্রা শুরু করবে। এরই সাথে দরকার থ্যালাসেমিয়ার জন্য পরীক্ষা করা। যদি ভাবী মায়ের বিটা থ্যালাসেমিয়া থাকে তাহলে তার স্বামীর পরীক্ষা করে দেখা দরকার যে, সে স্বাভাবিক কি না। সেও যদি বিটা থ্যালাসেমিয়ার বাহক হয় তো খুব মুশকিল, আগামী দিনের শিশুটির জন্য। দশ গ্রামের নীচে হিমোগ্লোবিন থাকলে রক্তাল্পতা। প্রধান ওষুধ লোহা কিন্তু গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে এটা দেওয়া হয় না। কারণ এই পিরিয়ডটা হচ্ছে ‘পিরিয়ড অব অর্গানোজেনেসিস’। এসময় ফলিক অ্যাসিড ছাড়া খুব প্রয়োজন না হলে আর কিছুই দেওয়া হয় না।
বাকী পরীক্ষার মধ্যে অবশ্যই জরুরি রক্তে শর্করার পরিমাণ দেখা। প্রস্রাবে শর্করা বা অ্যালবমিন আছে নাকি দেখা। বা কোনো সংক্রমণ আছে কিনা, তা দেখা। কারণ প্রস্রাবে সংক্রমণ না সারালে কম ওজনের শিশুর জন্ম হতে পারে। আরো আছে—ভি.ভি.আর.এস পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া উচিত রক্তে সিফিলিস বা গনোরিয়ার জীবাণু আছে কি না। এইচ.আই.ভি সংক্রমণ আছে কিনা তাও দেখে নেওয়া দরকার। হেপাটাইটিসের সংক্রমণ বা মা তার বাহক কিনা তাও দেখে নিতে হবে বৈকি। মা যদি হেপাটাইটিসের বাহক হন তবে শিশু জন্ম নেবার সাথে সাথে তাকে অ্যাক্টিভ এবং প্যাসিভ ইমিউনাইজেশান নিতে হবে, নইলে বাচ্চার লিভার সিরোসির হবার প্রবল সম্ভাবনা।
রক্তচাপ পরীক্ষা করা একটি অত্যন্ত জরুরি পদক্ষেপ। 120/80 মিমি অব মার্কারি হচ্ছে স্বাভাবিক রক্তচাপ। গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ বৃদ্ধি একটি অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। এতে মায়ের মৃত্যুও হতে পারে। সেজন্য চিকিৎসকরা সতর্ক দৃষ্টি রাখেন যাতে রক্তচাপ অন্তত 140/90 ছাড়িয়ে না যায়। যদি পারিবারিক রক্তচাপ বৃদ্ধির সমস্যা থাকে তবে সতর্কভাবে এই রক্তচাপ বৃদ্ধির দিকে নজর রাখতে হবে।
এর সাথেই করতে হবে ব্লাড গ্রুপ টেস্ট। যদি আগে করা না থাকে তাহলে নিশ্চয়ই প্রথম দেখানোর সাথে সাথে ব্যবস্থাপত্রে লিখতে হবে এ-বি-ও গ্রুপিং এবং আর-এইচ-ও গ্রুপিং পরীক্ষার কথা। গর্ভাবস্থায় যেকোনো সময় রক্তের দরকার হতে পারে সেজন্যই এই পরীক্ষা অতি জরুরি।
আর.এইচ.ও গ্রুপ পরীক্ষা খুব জরুরি কারণ যদি স্ত্রী আর.এইচ.ও নেগেটিভ হন ও স্বামী আর.এইচ.ও পজেটিভ হন তাহলে গর্ভস্থ শিশুর খুব সম্ভাবনা আর.এইচ.ও পজিটিভ হবার। সেজন্য জন্মের সাথে সাথে শিশুটির ব্লাড গ্রুপ দেখে নিতে হবে। যদি পজেটিভ হয় তবে তাকে দিতে হবে অ্যান্টি আর.এইচ. ইমিউনোগ্লোবিউলিন যাতে কোনো অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে পরবর্তী শিশুগুলির বিপদের কারণ না হয়।
এবার আসছি এইচ.আই.ভি এবং হেপাটাইটিস-বি সারফেস অ্যান্টিজেনের পরীক্ষার কথায়। এই দুটো পরীক্ষা আজকাল নিয়মিত পরীক্ষার মধ্যে পড়ে। এইচ.আই.ভি সংক্রমণ থাকলে তার বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন। আর শরীরে হেপাটাইটিসের অ্যান্টিবডি থাকলে (মা যদি বাহক হন) চিকিৎসককে সতর্ক হতে হবে আনাগত শিশুটির জন্য। প্রতিষেধক না দিলে জন্মের কিছুদিন বাদেই তার জীবন সংকট হতে পারে।
নিয়মিত পরীক্ষার মধ্যে টর্চ বলে একটা পরীক্ষা প্রায়ই করা হয়ে থাকে। এই টর্চ শব্দটা এক একটি সংক্রামক অসুখের আদ্য অক্ষর নিয়ে তৈরি। TO—টক্সোপ্লাসমোসিক, R—রুবেলা, C—সাইটোমেগালো ভাইরাস এবং H—হার্পিসের আদ্যাক্ষর। এই টেস্টটা করে নিলে বোঝা যাবে এই চারটি অসুখের বিরুদ্ধে মায়ের কতটা প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে বা এখন তার শরীরে কোনো ক্ষতিকারক জীবাণু আছে কি না। থাকলে তার উপযুক্ত ব্যবস্থা, আর না থাকলে ডাক্তারবাবু নিশ্চিন্ত।
আর একটি বিশেষ পরীক্ষা হচ্ছে ফিটাল ইকোকার্ডিওগ্রাফি। এটা হচ্ছে গর্ভস্থ শিশুর হার্টের বিশেষ পরীক্ষা। সব মায়েরই এই পরীক্ষা করার দরকার নেই। তখনই করাতে হবে যদি চিকিৎসকের কোনো কারণে মনে হয় গর্ভস্থ শিশুর হৃদস্পন্দনে কিছু অসঙ্গতি দেখাচ্ছে বা মায়ের ডায়াবেটিস আছে অথবা মায়ের বয়স অনেক বেশি হয়ে গেছে যখন অ্যাবনর্মাল শিশুর আগমনের সম্ভাবনা বেশি বা মায়ের কিছু সংক্রমণ হয়েছিল যাতে সন্দেহ হয় হার্টে কিছু অসঙ্গতি থাকতেও পারে। প্রতি 100 শিশুর মধ্যে একটির হার্টে সমস্যা থাকতে পারে। যেমন রুবেলা সংক্রমণ প্রথম তিন মাসের মধ্যে (ফার্স্ট ট্রাইমেস্টারে) কোনো মায়ের হলে যার (কোনো প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই) তার গর্ভস্থ শিশুর হার্টে ফুটো হতে পারে। ইকো কার্ডিওগ্রাফি করে সেটা নির্ণয় করা যাবে।
যাই হোক এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জন্মের আগেই শিশুটির সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানা যায় আর কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে সেটার প্রতিরোধেরও অনেক উপায় নেওয়া যায়। তাই আধুনিক ধাত্রী-বিদ্যা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এই গর্ভাবস্থায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
গর্ভাবস্থায় পরীক্ষার একটি সম্পূর্ণ নির্দেশিকা
গর্ভাবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল সময়, যা নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। এ সময় নিয়মিত চিকিৎসা পরামর্শ ও বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করা হয়। গর্ভাবস্থার বিভিন্ন ধাপে ভিন্ন ভিন্ন পরীক্ষা প্রয়োজন হয়, যা গর্ভবতী মায়ের শারীরিক অবস্থা ও শিশুর বিকাশ নির্ণয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
গর্ভাবস্থায় পরীক্ষার গুরুত্ব
গর্ভাবস্থার সময়ে পরীক্ষা করানোর মূল উদ্দেশ্য হলো-
- মায়ের স্বাস্থ্যের পর্যবেক্ষণ করা
- শিশুর বৃদ্ধির অবস্থা নির্ণয় করা
- গর্ভাবস্থায় কোনো জটিলতা আছে কিনা তা চিহ্নিত করা
- মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করা
- কোনো জন্মগত ত্রুটি আছে কিনা তা নির্ণয় করা
গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো
গর্ভাবস্থার তিনটি পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করা হয়:
প্রথম ত্রৈমাসিক (১-১২ সপ্তাহ)
১. গর্ভধারণ নিশ্চিতকরণ পরীক্ষা:
- প্রস্রাব পরীক্ষা (Urine Test)
- রক্ত পরীক্ষা (Beta-hC G Blood Test)
2. রক্তের গ্রুপ ও আরএইচ ফ্যাক্টর পরীক্ষা:
- মায়ের রক্তের গ্রুপ ও Rh ফ্যাক্টর নির্ণয় করা হয়।
- যদি মায়ের Rh নেতিবাচক এবং বাবার Rh ইতিবাচক হয়, তবে ভবিষ্যতে সমস্যা এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
3. সম্পূর্ণ রক্ত পরীক্ষা (Complete Blood Count - CBC):
- রক্তস্বল্পতা (Anemia) নির্ণয় করা হয়।
- সংক্রমণ আছে কিনা তা দেখা হয়।
4. থাইরয়েড পরীক্ষা:
- গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
5. সংক্রামক রোগ পরীক্ষা:
- হেপাটাইটিস বি ও সি
- এইচআইভি/এইডস
- সিফিলিস
- রুবেলা ও টক্সোপ্লাজমোসিস
6. ডায়াবেটিস স্ক্রিনিং (Random Blood Sugar - RBS Test):
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য প্রাথমিক পরীক্ষা করা হয়।
7. প্রাথমিক আলট্রাসাউন্ড (Early Ultrasound):
- শিশুর সঠিক অবস্থান এবং হৃদস্পন্দন নিশ্চিত করা হয়।
দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (১৩-২৭ সপ্তাহ)
1. অ্যানোমালি স্ক্যান (Anomaly Scan বা Level 2 Ultrasound):
- শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন ঠিক আছে কিনা তা নির্ণয় করা হয়।
2. গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট (Glucose Tolerance Test - GTT):
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে এটি করা হয়।
3. ট্রিপল বা কোয়াড্রুপল স্ক্রিন টেস্ট:
- শিশুর জেনেটিক সমস্যা যেমন ডাউন সিনড্রোম নির্ণয়ের জন্য করা হয়।
4. আয়রন ও ক্যালসিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা:
- মায়ের শরীরে আয়রন বা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আছে কিনা তা দেখা হয়।
5. অ্যামিনোসেনটেসিস (Amniocentesis) (প্রয়োজনে):
- এটি একটি বিশেষ পরীক্ষা যা শিশুর জেনেটিক বা ক্রোমোজোমজনিত ত্রুটি শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।

তৃতীয় ত্রৈমাসিক (২৮-৪০ সপ্তাহ)
1. বায়োফিজিক্যাল প্রোফাইল (Biophysical Profile - BPP):
- শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস, নড়াচড়া, পেশির টোন, এবং অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের মাত্রা নির্ণয় করা হয়।
2. নন-স্ট্রেস টেস্ট (NST):
- শিশুর হৃদস্পন্দন এবং নড়াচড়ার পর্যবেক্ষণ করা হয়।
3. গ্রুপ বি স্ট্রেপ্টোকক্কাস (GBS) পরীক্ষা:
- সংক্রমণ প্রতিরোধে এটি করা হয়।

4. রক্তচাপ ও প্রস্রাব পরীক্ষা:
- প্রি-এক্লাম্পসিয়া (উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা) চিহ্নিত করা হয়।
বিশেষ পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত পরীক্ষা
- যদি মা উচ্চ ঝুঁকির গর্ভবতী হন (উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, ইত্যাদি থাকে) , তবে অতিরিক্ত পরীক্ষা করা হতে পারে।
- যমজ বা একাধিক সন্তানের গর্ভধারণে নিয়মিত আলট্রাসাউন্ড ও অন্যান্য বিশেষ পরীক্ষা করা হতে পারে।
গর্ভাবস্থার প্রতিটি ধাপে নির্দিষ্ট পরীক্ষাগুলো মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


Comments